ভ্রমন পিপাসুদের জন্য একটি আদর্শ একটি দর্শনীয় স্থান জাফলং। যার অবস্থান সিলেটে। এর পাশ ঘেষেই রয়েছে ভারতের মেঘালয় রাজ্য। পাহাড়, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত আর মেঘালয় থেকে ভেসে আসা স্বচ্ছ পানির নদী জাফলংকে করেছে অনন্য।
স্বল্প খরচ আর বন্ধুদের সাথে সিলেট ভ্রমণ। দুই মিলিয়ে অসাধারণ এক সুযোগ। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্টের উদ্যোগে আয়োজিত এই সুযোগ হাতছাড়া করলাম না।
২৯ ফেব্রুয়ারি ভোরে আমরা সিলেট শহরে পৌঁছাই। সেখানে একটি হোটেলে সবাই ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে যাই হযরত শাহজালাল (র) এর মাজার দেখতে। মাজারের গেট পার হতেই ঝাকে ঝাকে উড়ে যাওয়া সাদা কবুতর দৃষ্টি কেড়ে নিল। একটু উচ্চ সিঁড়ি বেয়ে উঠতেই চোখে পড়ল আল্লাহর সেই প্রিয় বান্দার বান্দা হযরত শাহজালাল (র) এর মাজার। এর পাশেই থাকা বাংলা সিনেমার দুই কালের শ্রেষ্ঠ নায়ক সালমান শাহর কবরটিও দেখে নেওয়া হল।
মাজার থেকে একশটু দূরের একটি হোটেলে সকালের নাস্তা সেরে নেওয়া সেরে নিলাম। এরপর আবারও বেরিয়ে পড়লাম জাফলংয়ের দিকে।
চলতে চলতে অনেক্ক্ষণ পর মেঘালয়ের পাহারের দেখা মিললো। মনে অজান্তেই পাহাড় গুলো জানিয়ে দিলো জাফলং চলে এসেছি।
দু দেশের সীমান্তে দাঁড়িয়ে ওপারে পাহারে থাকা ঘর গুলো দেখতে একদম কবুতরের ঘরের মতো লাগছিলো। এরপর খাঁড়া এক সিড়িঁ বেয়ে নিচে জাফলং জিরো পয়েন্ট পৌছালাম।
এরপর সেই মেঘালয় থেকে ভেসে আসা নদীর ঠান্ডা জলে গা ভাসাতে লাগলাম জাফলং জিরো পয়েন্টে। আহ, কি ঠাণ্ডা আর কি স্বচ্ছ পানি! সত্যি এর আগে আমি কখনো দেখিনি। উপর থেকে তাকালে পানির নিচের নিচে থাকায় প্রতিটি বালিকনাই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল।
রোদ্রময় দুপুরে এমন ঠান্ডা পানিতে ঝাঁপা-ঝাপি করে নিজেকে ঠান্ডা করতে গিয়ে কখন যে পাথরের আঘাতে সারা শরীর ব্যথা হয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি। উঠতে বেশ কষ্ট হলেও অবশেষে উঠলাম। এরপর ফ্রেশ হয়ে জাফলংয়ের একটি হোটেলে দুপুরের খাওয়া সেরে নিলাম। এই সময়টাতে সকল ক্লান্তি দূর হয়ে আহ, অন্য রকম কা প্রশান্তি লাগছিল।
এবার বেরিয়ে পরলাম নতুন কিছু দেখতে। সেই নদী ধরেই নৌকায় যাত্রা শুরু হল খাসিয়া পল্লীতে। নৌকা আর অটোরিকশা যোগে পৌঁছালাম খাসিয়া পল্লীর চা বাগানে। আসার পথে খাসিয়া উপজাতিদের ঘরগুলো ছিল বাঙ্গালীদের থেকে ভিন্ন। ওদের ঘর গুলো দেখতে অনেকটা দোতলা ঘরের মতো। যা দেখতে খুবই চমৎকার এবং পরিপাটি ছিল।
পড়ন্ত বিকেলে সবুজ চা বাগান। এই প্রথম এত কাছ থেকে দেখা। অন্যরকম এক অনুভূতি। মনে হচ্ছিল বিশাল এই চা বাগানের সবুজের মাঝে কিছুক্ষণ ডুবে থাকি। পরন্ত বিকেলে চা বাগানের এমন চোখ জুড়ানো দৃশ্য আহ কি চমৎকার! কিন্ত সে সুযোগ আর হলো কই? গোধূলি সন্ধ্যায় সূর্য যখন লাল আভা নিয়ে অস্তের পথে ঠিক তখোনই এই চাবাগন থেকে বিদায় নিতে হলো।
নৌকা আবার ফেরা হলো জাফলং জিরো পয়েন্ট। এখানে এসে দাঁড়াতেই মেঘালয় থেকে ভেসে আসা মিষ্টি বাতাস মন জুড়িয়ে দিলো। অন্যরকম এক আবেশ তৈরি হলো। এ যেন অনন্য এক অনুভুতি। যেন এমন বাতাসের ছোঁয়া শরীর এর আগে কখনো পায়নি। আহ কি প্রশান্তি! পৃথিবীর সকল সুখ যেন এখানেই।
ভ্রমণ শেষে ক্যাম্পাসে ফেরা হয়েছে প্রয় দু মাস হলো কিন্তু মেঘালয় থেকে ভেসে আসা সেই বাতাসের আবেশে আটকে আছে আমার মন। সন্ধ্যার সেই সময়টা আর মিষ্টি শীতল বাতাসের বাতাসের টানে ফের জাফলং যেতে চায় মন।
মো: মিরাজুল ইসলাম
শিক্ষার্থী, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
স্বল্প খরচ আর বন্ধুদের সাথে সিলেট ভ্রমণ। দুই মিলিয়ে অসাধারণ এক সুযোগ। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্টের উদ্যোগে আয়োজিত এই সুযোগ হাতছাড়া করলাম না।
২৯ ফেব্রুয়ারি ভোরে আমরা সিলেট শহরে পৌঁছাই। সেখানে একটি হোটেলে সবাই ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে যাই হযরত শাহজালাল (র) এর মাজার দেখতে। মাজারের গেট পার হতেই ঝাকে ঝাকে উড়ে যাওয়া সাদা কবুতর দৃষ্টি কেড়ে নিল। একটু উচ্চ সিঁড়ি বেয়ে উঠতেই চোখে পড়ল আল্লাহর সেই প্রিয় বান্দার বান্দা হযরত শাহজালাল (র) এর মাজার। এর পাশেই থাকা বাংলা সিনেমার দুই কালের শ্রেষ্ঠ নায়ক সালমান শাহর কবরটিও দেখে নেওয়া হল।
মাজার থেকে একশটু দূরের একটি হোটেলে সকালের নাস্তা সেরে নেওয়া সেরে নিলাম। এরপর আবারও বেরিয়ে পড়লাম জাফলংয়ের দিকে।
চলতে চলতে অনেক্ক্ষণ পর মেঘালয়ের পাহারের দেখা মিললো। মনে অজান্তেই পাহাড় গুলো জানিয়ে দিলো জাফলং চলে এসেছি।
দু দেশের সীমান্তে দাঁড়িয়ে ওপারে পাহারে থাকা ঘর গুলো দেখতে একদম কবুতরের ঘরের মতো লাগছিলো। এরপর খাঁড়া এক সিড়িঁ বেয়ে নিচে জাফলং জিরো পয়েন্ট পৌছালাম।
এরপর সেই মেঘালয় থেকে ভেসে আসা নদীর ঠান্ডা জলে গা ভাসাতে লাগলাম জাফলং জিরো পয়েন্টে। আহ, কি ঠাণ্ডা আর কি স্বচ্ছ পানি! সত্যি এর আগে আমি কখনো দেখিনি। উপর থেকে তাকালে পানির নিচের নিচে থাকায় প্রতিটি বালিকনাই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল।
রোদ্রময় দুপুরে এমন ঠান্ডা পানিতে ঝাঁপা-ঝাপি করে নিজেকে ঠান্ডা করতে গিয়ে কখন যে পাথরের আঘাতে সারা শরীর ব্যথা হয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি। উঠতে বেশ কষ্ট হলেও অবশেষে উঠলাম। এরপর ফ্রেশ হয়ে জাফলংয়ের একটি হোটেলে দুপুরের খাওয়া সেরে নিলাম। এই সময়টাতে সকল ক্লান্তি দূর হয়ে আহ, অন্য রকম কা প্রশান্তি লাগছিল।
এবার বেরিয়ে পরলাম নতুন কিছু দেখতে। সেই নদী ধরেই নৌকায় যাত্রা শুরু হল খাসিয়া পল্লীতে। নৌকা আর অটোরিকশা যোগে পৌঁছালাম খাসিয়া পল্লীর চা বাগানে। আসার পথে খাসিয়া উপজাতিদের ঘরগুলো ছিল বাঙ্গালীদের থেকে ভিন্ন। ওদের ঘর গুলো দেখতে অনেকটা দোতলা ঘরের মতো। যা দেখতে খুবই চমৎকার এবং পরিপাটি ছিল।
পড়ন্ত বিকেলে সবুজ চা বাগান। এই প্রথম এত কাছ থেকে দেখা। অন্যরকম এক অনুভূতি। মনে হচ্ছিল বিশাল এই চা বাগানের সবুজের মাঝে কিছুক্ষণ ডুবে থাকি। পরন্ত বিকেলে চা বাগানের এমন চোখ জুড়ানো দৃশ্য আহ কি চমৎকার! কিন্ত সে সুযোগ আর হলো কই? গোধূলি সন্ধ্যায় সূর্য যখন লাল আভা নিয়ে অস্তের পথে ঠিক তখোনই এই চাবাগন থেকে বিদায় নিতে হলো।
নৌকা আবার ফেরা হলো জাফলং জিরো পয়েন্ট। এখানে এসে দাঁড়াতেই মেঘালয় থেকে ভেসে আসা মিষ্টি বাতাস মন জুড়িয়ে দিলো। অন্যরকম এক আবেশ তৈরি হলো। এ যেন অনন্য এক অনুভুতি। যেন এমন বাতাসের ছোঁয়া শরীর এর আগে কখনো পায়নি। আহ কি প্রশান্তি! পৃথিবীর সকল সুখ যেন এখানেই।
ভ্রমণ শেষে ক্যাম্পাসে ফেরা হয়েছে প্রয় দু মাস হলো কিন্তু মেঘালয় থেকে ভেসে আসা সেই বাতাসের আবেশে আটকে আছে আমার মন। সন্ধ্যার সেই সময়টা আর মিষ্টি শীতল বাতাসের বাতাসের টানে ফের জাফলং যেতে চায় মন।
মো: মিরাজুল ইসলাম
শিক্ষার্থী, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।